পশ্চিমবঙ্গবাসী এতবধি চাক্ষুষ করিয়াছেন ~
১. হ্যাট্রিককারী মুখ্যমন্ত্রী ~ প্রফুল্ল চন্দ্র ঘোষ । (স্বল্প মেয়াদে তিন দফায় গদি পাইয়াছিলেন।)
২. ভারতরত্ন মুখ্যমন্ত্রী ~ বিধান চন্দ্র রায়। (একটি উল্টানো ডাঙাকে সোজা করিয়া জনবসতি স্থাপন করিয়াছিলেন।)
৩. চিরকুমার মুখ্যমন্ত্রী ~ প্রফুল্ল চন্দ্র সেন। (আজীবন খাদি পড়িয়া কম্যুনিস্ট পার্টির বিরোধিতা করিয়াছেন। হুইল চেয়ারও তাঁহাকে দমাইতে পারে নাই।)
৪. সন্ধিপ্রবণ মুখ্যমন্ত্রী ~ অজয় মুখার্জী। (বঙ্গ কংগ্রেস নামক নির্বীষ সর্পটিকে বিষধর করিবার উদ্দেশ্যে কম্যুনিস্ট পার্টির সাথে যুক্ত করিয়া সহজ সন্ধির নিয়মে ‘যুক্তফ্রন্ট’ নামক একটি স্বল্পায়ু আশীবিষ সৃষ্টি করিয়াছিলেন।)
৫. খেলোয়াড় মুখ্যমন্ত্রী ~ সিদ্ধার্থশঙ্কর রায়। (ক্রীড়াজীবনে সুব্যাটস্ম্যান হিসাবে ও মুখ্যমন্ত্রীত্বকালে সুবোলার হিসাবে প্রসিদ্ধি লাভ করিয়াছিলেন। তাঁহার উইকেট সংখ্যা কপিলদেবকেও লজ্জায় ফেলিতে পারে।)
৬. নির্বিকার মুখ্যমন্ত্রী ~ জ্যোতি বসু। (ময়দানে ভিনগ্রহের আকাশযান নামিয়াছে শুনিয়াও যিনি “অ” এর অধিক কোনও শব্দ খরচ করিতেন না বলিয়া আমার বিশ্বাস। তাঁহার বাণীসমগ্র একটি হ্যান্ডবিলেই ছাপাইয়া ফেলা সম্ভব। রেকর্ডকালীন সময় মুখ্যমন্ত্রী থাকিয়া আমার এই তালিকার দৈর্ঘ্যসঙ্কোচন করিয়াছেন।)
৭. সংখ্যাতাত্ত্বিক মুখ্যমন্ত্রী ~ বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য্য। (“আমরা ২৩৫, ওরা ৩৫”)
এইবারে আসিয়াছে.....................
৮. গোয়েন্দা মুখ্যমন্ত্রী ~ মমতা ব্যানার্জী।
{বাঙালী, বাবু গোয়েন্দা দেখিয়াছে ~ ব্যোমকেশ। দাদা গোয়েন্দা দেখিয়াছে ~ ফেলুদা। মাসি কিম্বা কাকু গোয়েন্দাও বাজারে বর্তমান (আনন্দমেলা পুজাবার্ষিকী পড়ুন) কিন্তু এই প্রথম দিদি গোয়েন্দা দেখিয়া আমাদের চক্ষু চড়কগাছ। রাজ্যের সকল ঘটমান বর্তমানকে “সাজানো ঘটনা” এবং “সিপিয়েমের চক্রান্ত” বলিয়া নিমেষে রহস্যকে সহাস্য করিয়া তোলেন। আগাথা ক্রিস্টির মার্পলের বহুযুগ পর এই “অযথা সৃষ্টি” মমতার আবির্ভাব।দু’টি ব্যাপারের গুণগত মান লইয়া প্রশ্ন তোলা অবান্তর। কারণ দুটির জনপ্রিয়তাই আকাশচুম্বী। বেদের মেয়ে জ্যোৎস্না ও জেদের মেয়ে মমতা।তিনি, সিপিয়েম যা করে, তার বিপরীত কার্যটি করিয়া নিজের জনপ্রিয়তা প্রমাণের মরিয়া চেষ্টা করেন। সিপিয়েম মিছিল করিয়াছে। ইনিও মিছিল হাঁকিলেন। একবার ৮বি হইতে গাঙ্গুলীবাগান, আরেকবার গাঙ্গুলীবাগান হইতে ৮বি। অর্থাৎ, সরণ শূণ্য। পদার্থবিদ্যার নিয়মে কার্যও শূণ্য। যাহা বিগত ন’মাসে রাজ্যের খতিয়ান। (ক্ষতিয়ান বানানেও যা সমান অর্থবহ।)। ৫১ মাসে তিনি কালীঘাট হইতে আরম্ভ করিয়া একে একে সতীর সবক’টি পীঠ আমাদিগকে চাক্ষুষ করাইয়া ছাড়িবেন। বঙ্গবাসী সেই তীর্থদর্শনের আশঙ্কায় রহিল।
Comments
Post a Comment